ইসরাইলের স্বীকারোক্তি: ইসমাইল হানিয়াসহ হামাস নেতাদের হত্যার তথ্য প্রকাশ
- By Jamini Roy --
- 24 December, 2024
ইসরাইল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রয়াত প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ তার বক্তব্যে হানিয়ার হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘আমরা হুতিদের কঠোরভাবে আঘাত হানব এবং তাদের নেতৃত্ব ধ্বংস করব। যেমনটা আমরা তেহরানে হানিয়া, গাজায় সিনওয়ার এবং লেবাননে নাসরুল্লাহর ক্ষেত্রে করেছি। ঠিক একইভাবে হোদেইদা এবং সানায়ও করব।’’
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রায় পাঁচ মাস পর বিষয়টি প্রথমবারের মতো স্বীকার করল ইসরাইল। এর আগে, গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার অভিযোগ তোলে হামাস এবং ইরান। তবে এতদিন এই হত্যার দায় অস্বীকার করে আসছিল ইসরাইল।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আজ যখন হুতি সন্ত্রাসীরা ইসরাইলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে, আমি তাদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই: আমরা হামাসকে পরাজিত করেছি, হিজবুল্লাহকে দুর্বল করেছি এবং ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুতর ক্ষতি করেছি। ইয়েমেনে হুতি সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধেও আমরা গুরুতর আঘাত হানব।’’
২০২২ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি সীমান্তে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এর পর থেকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। পাশাপাশি, ৭ অক্টোবরের হামলার নেতৃত্বদানকারী হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী একের পর এক গুপ্তহত্যা চালিয়ে আসছে।
গত ১৫ মাসে ইরান-সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে ইসরাইল ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে বোমা হামলা, গুপ্তহত্যা এবং সামরিক কৌশল ব্যবহার করে হামাস, হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। ইসমাইল হানিয়া ছাড়াও হামাসের আরেক নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং হিজবুল্লাহর দীর্ঘদিনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহকেও হত্যা করা হয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর এই অভিযান শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। গত সেপ্টেম্বরে অভিযান বিস্তৃত হয় লেবানন পর্যন্ত। ইসরাইলি সেনারা ইরান-সমর্থিত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযানে অংশ নিচ্ছে। বিশেষত, এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার মাধ্যমে তাদের দুর্বল করার কৌশল নিয়েছে ইসরাইল।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ইসমাইল হানিয়া হত্যার স্বীকারোক্তি হামাসসহ ইরান-সমর্থিত অন্যান্য সংগঠনের জন্য এক গুরুতর বার্তা বহন করে। ইসরাইলের এই কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।